হ্যালুসিনেশন কী, কেন এবং তার প্রতিকার

বতর্মানে বিভিন্ন কারণে হ্যালুসিনেশন শব্দটি খুবই জনপ্রিয়। কেউ দেখেন মজার বিষয় হিসাবে, কেউ নাটক বা উপন্যাসের উপকরণ হিসাবে আবার কেউ বিশেষ ক্ষমতা প্রাপ্তির সাথে একে তুলনা করেন। আসলে হ্যালুসিনেশন হল একটি প্যাথলজিকাল কন্ডিশন। এটি একটি অস্বাভাবিক অনুভূতি। অনুভূতি সাধারণ এবং সত্যের মত হলেও এর কার্যাবলি ও উপস্থিতি সকল ক্ষেত্রেই অস্বাভাবিক ও অসংগতিপূর্ণ যা একেবারেই সুখের নয়।

hallucination why and its solution

হ্যালুসিনেশন আসলে কী?

শরীরের বিভিন্ন ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে আমরা যে সকল অনুভূতি অনুভব করি (ছোয়া, গন্ধ, স্বাদ ইত্যাদি) এবং যেগুলোকে আমরা সত্য বলে জানি দেখি ও বিশ্বাস করি হ্যালুসিনেশনের অনুভূতি এ ঠিক তেমনই। অবিকল সত্য কিন্তু সেখানে বাস্তব সত্য কোনো স্টিমুলেশন অথবা বাস্তব কোনো কিছুর অবস্থান থাকে না। হ্যালুসিনেশন কোন স্বপ্ন নয়। ইচ্ছা করলেই কেউ হ্যালুসিনেশনের অনুভূতি গুলোকে অনুভব করতে পারবে না। এমনকি হ্যালুসিনেশন হলে ইচ্ছা করলেই কেউ আবার এই অনুভূতি গুলোকে বাদ দিতে পারবে না। সম্পূর্ণ ঘটনাটিতে হ্যালুসিনেশনে আক্রান্ত ব্যাক্তির কোন ধরনের ইচ্ছা, নিয়ন্ত্রন থাকে না। এখানে আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল যে হ্যালুসিনেশনে আক্রান্ত ব্যাক্তিটি এই ধরনের অবাস্তব অনুভূতি গুলোকে একেবারে সত্য মনে করে। উদাহরণ সরুপ বলা যায়, কোনো একজন ব্যাক্তি হ্যালুসিনেশনে আক্রান্ত এবং সে দেখছে তার পাশে একটা লোক সারাক্ষণ ঘুরাঘোরি করছে, তার সাথ কথা বলছে বা তাকে স্পর্শ করছে। কিন্তু বাস্তবে তেমন লোকই নেই। অন্য সুস্থ মানুষরা সেই অবাস্তব লোকটিকে কখনই দেখবে না। এখন এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের সকল মানুষ এসেও যদি আক্রান্ত ব্যাক্তিকে বুঝানোর চেষ্টা করে কোনো তাহলে এক বিন্দুও কাজ হবে না।
এমন ও হতে পারে আক্রান্ত মানুষটি এক বা একের অধিক মানুষের সাথে কথা বলতে পারে। হতে পারে সে এখানে বসে লন্ডনে কারো সাথে কথা বলছে। আসলে কেউ কেউ এটাকে অলৌকিক শক্তি ভাবলেও এটা একটা মানসিক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তির চিকিৎসা শুরু হবার কিছু দিন পর যথন রোগ একটু একটু নিয়ন্ত্রনে আসে তথন বেশীরভাগ রোগীই ঘটনাটি বুঝতে পারে।

হ্যালুসিনেশন কেন হয়?

হ্যালুসিনেশনের কারন এখনও স্পষ্ট নয়। হ্যালুসিনেশন নিজে কোনো রোগ নয়, বরং অন্য রোগের উপসর্গ। প্রধানত এটি মানসিক সমস্যা অথবা রোগের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তবে কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক সমস্যার সাথে হ্যালুসিনেশন যোগ থাকতে পারে। তাই কেবল হ্যালুসিনেশন দিয়ে কোনো নির্দিষ্ট রোগ নির্ণয় করা সম্ভব নয়। সিজোফ্রেনিয়া, সিভিয়ার মুড ডিসঅর্ডার, ডিল্যুশনাল ডিসঅর্ডারের সাথে প্রায়ই হ্যালুসিনেশন দেখা যায়। মস্তিস্কের সমস্যায় হ্যালুসিনেশন হতে পারে। এমনকি শরীরে লবণের তারতম্যের জন্যেও স্বল্পমেয়াদের হ্যালুসিনেশন দেখা দিতে পারে।

what is hallucination

হ্যালুসিনেশন নির্ণয় এবং এর চিকিৎসা

হ্যালুসিনেশন নির্ণয় করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পরে। মনের ভিতর থেকে আসা চিন্তা কথা এবং অনুভূতির সাথে হ্যালুসিনেশনকে মিলিয়ে ফেলা হয় অনেক সময়। যেহেতু হ্যালুসিনেশন নিজে একা থাকে না তাই এর পিছনের রোগটির ধারনের সাথে ও এর অনেক মিল থাকে। হ্যালুসিনেশন নির্ণয়ের ক্ষেত্রে তাই সার্বিক রোগ নির্ণয় করা জরুরি এবং অবশ্যই তা বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে করা উচিত। চিকিৎসা বিষয়টি নির্ভর করে হ্যালুসিনেশনের পেছনে থাকা রোগটির উপর। অর্থাৎ রোগটির চিকিৎসা মানেই হ্যালুসিনেশনের চিকিৎসা। তবে সব ক্ষেত্রেই এর চিকিৎসা “এন্টিসাইকোটিক” ঔষুধনির্ভর হয়ে থাকে।   Y334GMH7UYKE

1 মন্তব্যসমূহ

এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন