কিভাবে প্রতিদিন অল্পসময়ে চোখ, মুখের ত্বক আর চুলের যত্ন নিবেন?

প্রতিদিনকার জীবনে আমরা সবাই অনেক কাজ করে থাকি। আমরা সবাই সারাদিন কোন না কাজে ব্যস্ত থাকি অনেকে আবার রাত জেগেও কাজ করে থাকি। এইভাবে কাজ করে আমরা একসময় ক্লান্ত হয়ে পরি আর এই ক্লান্তির ছাপ টা আমাদের চেহারায় পড়ে আর আমাদের শরীরটা ক্লান্তিতে ভেঙ্গে পড়ে।


Easy beauty tips in bangla

যেমন, আমরা যখন দিনের বেলায় কাজ করি তখন আমাদের ত্বক রোদে পুড়ে, ধুলাবালি পড়ে ময়লা হয়ে যায়, চেহারার উজ্জ্বলতা নষ্ট হয়ে যায়, চুল রুক্ষ হয়ে যায়, চুল পড়া শুরু হয়, শরীর ক্লান্তিতে বেশ দূর্বল হয়ে যায়। আবার অনেকে রাত জেগে কাজ করতে ভালোবাসে, এতেও অনেক সমস্যা দেখা দেয়। এই ধরনের সমস্যা দূরীকরণে আজকে আমি হাবিবা খানম তুষি আপনাদের কিছু কার্যকরী টিপস দিব যা কিনা আপনার বেশ অনেকটাই কাজে দিবে।

চলুন তাহলে জেনে নিই মিনি টিপসগুলো...

০১. রোদে পুড়া ত্বকের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে করতে পারেন কিছু কাজ। একটি পাত্রে সামান্য পরিমাণে বেসন নিন, তাতে পানি দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে বরফদানীতে ঢেলে ফ্রিজে রেখে দিন। জমে শক্ত হয়ে গেলে, সেইটা আপনি রোদ থেকে এসে মুখে লাগান। এতে আপনার রোদে পুড়া ভাব টা দূর হবে আর ক্লান্তিটাও বেশ কমে যাবে। আবার একই কাজ আপনি যেকোন ফল দিয়ে করতে পারেন, যেমন : কলা, আপেল, মালটা ইত্যাদি। মালটার রস টা একইভাবে ফ্রিজিং করে রাখতে পারেন। তবে যেটাই করুন না কেন, ঠান্ডা হলে খুব ভাল কাজে দিবে।


০২. যারা রাত জেগে পড়াশুনা করেন বা অন্যান্য কাজ করেন তাদের চোখের নিচে কালো দাগ হয়ে থাকে,। চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে আপনি আলু ব্যবহার করতে পারেন। চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে আলু সবচেয়ে বেশি উপকারী। আলুর খোসা সহ ভালো ভাবে ব্লেন্ড করে তাতে কিছটা পরিমান পানি মিশিয়ে তার রস সহ চোখের চারপাশে ভালোমত লাগান। প্রয়োজনে তুলা ব্যবহার করতে পারেন। ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখুন তারপর ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন এই পদ্ধিতিটি ৭ দিন ব্যবহার করে দেখুন অবশ্যই ফল পাবেন। আবার কাজু বাদাম ভালো মত ব্লেন্ড করুন এবং এর সাথে সামান্য পরিমাণে দুধ মিশান, এরপর এই মিশ্রণটি চোখের চারপাশে ভালোমত লাগান। ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন, এটিও আপনি প্রতিদিন করতে পারেন।

০৩. মুখের কালো দাগ ও ক্লান্তি দূর করতে শশার ভূমিকা অপরিসীম। আপনি আপনার ত্বকের যত্নে যে প্যাকটি ইউজ করেন যেমন চন্দন, মুলতানি মাটি, বেসন ইত্যাদি প্যাকের সাথে শশার রস মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন বেশ ফুরফুরে লাগছে।

০৪. রোদ এবং ধূলাবালির জন্য চুলের অবস্থা অনেক খারাপ হয়ে যায়। চুল হয়ে পড়ে রুক্ষ। একটি আস্ত রসূন নিন, ভালোমতো রসূনের খোসা ছাড়ান, পরিমাণমত নারকেল তেল নিন। এবার রসূন আর নারকেল তেল অল্প আঁচে ভালোমতো গরম করুন। যখন রসূন গুলা নরম হয়ে আসবে তখন নামিয়ে ফেলুন। ঠান্ডা হয়ে এলে তেলটি মাথায় লাগান। এবং ১৫ মিনিট মেসেজ করুন। এরপর ঠান্ডা পানি ও শ্যম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার চুল হবে সিল্কি, দূর হবে রুক্ষতা।

০৫. চুল পড়া কমাতে আরো একটি তেল আপনারা ব্যবহার করতে পারেন। গোটা একটা কঁচি এলোভেরা নিন। পরিমাণ মত নারকেল তেল নিয়ে তাতে এলোভেরা দিয়ে ভালো মত গরম করুন, তারপর একটি পাত্রে তেলটি ছাঁকনি দিয়ে ভালোমত ছাঁকুন। এই তেলটি আপনি ফ্রিজে রেখে অনেক দিন ব্যবহার করতে পারবেন। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহারে আপনি ভালো ফল পাবেন।

০৬. একটি বোতলে পুরো একটা লেবুর রস নিন। এতে সামান্য পরিমাণে পানি মিশান। ভালোমত ঝাঁকুন, তারপর মিশানো লেবুর রিস আর পানি ভালো মত আপনার মাথায় স্প্রে করেন। স্প্রে না থাকলে হাত দিয়ে লাগাতে পারেন। এরপর আপনার চুল স্বাভকিকভাবে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার মাথার খুশকি দূর হবে আর চুল হবে মশ্রিন।

০৭. চুল আরো বেশি সুন্দর আর লম্বা করতে পেঁয়াজের রস ব্যবহার করুন। পেঁয়াজের রসের সাথে ডিমের সাদা অংশ আর টক দই মিশিয়ে ব্যবহার করুন। এটি মাসে ৩ থেকে ৪ বার ব্যবহার করতে পারেন।

০৮. মুখের উজ্জ্বলতা বাড়াতে কফি ব্যবহার করতে পারেন। কফির সাথে সামান্য পরিমাণে গাজর আর টমেটোর রস মিশিয়ে ভালোমত মুখের চারদিকে লাগিয়ে শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। শুকানোর পর হাতে সামান্য পরিমাণে পানি নিয়ে মুখে মেসেজ করতে করতে ধুয়ে ফেলুন।

০৯. সবচেয়ে বড় কথা হলো সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে হলে বেশি বেশি পানি খান। পানির কোন বিকল্প নেই। খাওয়া দাওয়া ঠিক মত ঠিক টাইমে করুন। প্রতিদিন অল্প হলেও সবজি আর ফলমূল খেতে চেষ্টা করুন। একসাথে বেশি পরিমানে খাবার না খেয়ে একটু পর পর খাবেন। তৈলাক্ত জিনিস কম খাবার চেষ্টা করবেন। এটা আমরা সবাই জানি যে ভাজা পোড়া খাবার আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

আমাদের এই টিপস গুলা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং সব গুলোই আমার নিজের দ্বারা ব্যবহৃত। :-)

সবশেষে একটাই কথা বলবো সুস্থ থাকাটা সবটুকুই আপনার হাতে। আরো সুন্দর সুন্দর নতুন টিপস পেতে আমাদের এই ব্লগ নিয়মিত ভিজিট করুন। আমি তো আছিই আপনাদের সাথে। যেকোন সমস্যা আমাকে জানাতে পারবেন নিচে কমেন্ট করে।

এই পোস্টটি লিখেছেন:

হাবিবা খানম তুষিহাবিবা খানম তুষি
হাবিবা খানম তুষি

হাবিবা খানম তুষি এই ব্লগের একজন নিয়মিত লেখিকা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে বেড়ে উঠা “হাবিবা খানম তুষি” বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিউজিক ডিপার্টমেন্ট এ পড়াশোনা করছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন বিষয়ে শিখতে ও লিথতে পছন্দ করেন।
তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন তার ফেসবুক আইডিতে

এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)

নবীনতর পূর্বতন