মানুষের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের মুখ্য ১০ টি কারণ

লেখাপড়া আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা সবাই উচ্চশিক্ষা গ্রহণের আপ্রাণ চেষ্টা করি। কিন্তু অনেকেই আমরা লেখাপড়া করার আসল অর্থটা বুঝি না। আসলে লেখাপড়া জিনিস টা কি? আমরা কি এই মর্ডান যুগে শিক্ষা ছাড়া কিছু করতে পারবো? আর কি ই বা হবে এত শিক্ষা গ্রহণ করে?

তাহলে চলুন জেনে নিই কি কারণে আমরা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করি তার পিছনের মূল ১০ টি কারণ :


Higher Education

১. পরিপূর্ণভাবে মানুষ হওয়া

একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই লেখাপড়া করতে হবে, কারণ শিক্ষায় লুকিয়ে আছে একজন শিক্ষিত পরিপূর্ণ মানুষ হওয়ার মূলমন্ত্র। আজকের বিশ্বের কাছে নিজেকে শিক্ষিত আর স্মার্ট হিসেবে নিজের পরিচয় দিতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই লেখাপড়া করতে হবে এবং এই লেখাপড়াটা এতটাই শক্তিশালী হতে হবে যেন আপনি আজকের বিশ্বের সাথে নিজেকে খাপখাওয়াতে পারেন।

২. বিচক্ষণতার প্রকাশ

বিবেকের সুষ্ঠু জাগরণ এবং পশুবৃত্তি হত্যার জন্য আপনাকে অবশ্যই উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। যদি বিবেককে কাজে লাগাতে চান, তাহলে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হোন। অনেক অনেক বেশি জানুন আর এই জানাটাই আপনার বিচক্ষণতার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করবে।


৩. নিজের আত্নউন্নয়ন

নিজের উন্নয়ন কে না চাই? আপন ভালো তো পাগলও বুঝে, জীবনে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগাতে চান তাহলে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হোন। মনে রাখবেন, লেখাপড়া ছাড়া কখনো উন্নতি সম্ভব নয়, উচ্চশিক্ষার শিক্ষিত ছাড়া জীবন উপভোগ করে মজা পাবেন না। হ্যাঁ, আপনি শিক্ষা ছাড়া জীবন উপভোগ করতে পারেন, কিন্তু এই ধরনের ভোগে কেবল আফসোস থাকবে, কারণ আপনার কোন নিজস্ব উন্নতি নেই, এতে আপনার আফসোস আসবেই। তাই আফসোস যেনো না করতে হয়, সেজন্য যতদূর সম্ভব পড়াশুনা করুন, বেশি বেশি জানুন, কারণ জানার কোন শেষ নেই।

৪. কাজ কর্মে সৃজনশীলতা

লেখাপড়া কর্মে সৃজনশীলতা আনতে সাহায্য করে। লেখাপড়া আপনার সৃষ্টির জগতকে করবে শক্তিশালী, আপনাকে করবে মনন আর মেধায় আরো বেশি শক্তিশালী। নিজের ভিতরের সৃজনশীলতাকে বৃদ্ধি কর‍তে লেখাপড়া করুন, অনেক অনেক বই পত্র ঘাটাঘাটি করুন। বিশ্বের সকল সৃজনশীল ও পরিশ্রমী ব্যক্তিদের জীবনী পড়ুন। তাদের জীবনী আপনাকে তাদের মত নয় কিন্তু তাদের সূত্রানুযায়ী চলতে সাহায্য করবে।

৫. স্মার্ট ও আত্নপ্রত্যয়ী হওয়া

স্মার্ট ও আত্নপ্রত্যয়ী হতে চাইলে স্মার্টলি লেখাপড়া করেন। লেখাপড়া আপনাকে স্মার্ট হতে সাহায্য করবে, আত্নপ্রত্যয়ী হতে সাহায্য করবে। লেখাপড়া আপনার নিজেকে নিজের কাছে আত্নপ্রত্যয়ী করে তুলবে।

৬. অন্যদের থেকে অভিজ্ঞতা লাভ

আপনি অনেক অনেক ধরনের বই পড়বেন, একেক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লেখকের আপনাকে তাদের থেকে অভিজ্ঞতা লাভ করতে সাহায্য করবে, আপনি আপনার ক্লাসের প্রত্যেকটি ছাত্র ছাত্রীর কাছ থেকে অভিজ্ঞতা লাভ করতে চেষ্টা করবেন, কারণ পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষই আলাদা অভিজ্ঞতা ও প্রতিভা সম্পন্ন।

Higher Education Example Picture

৭. বিনোদন

আপনি বিনোদন লাভে পড়াশুনা করবেন, লেখাপড়ায় অনেক বিনোদন লাভের উপায় আছে। আপনি নিজের পড়াশুনার সাথে সাথে বন্ধুদের সাথে গ্রুপ স্টাডি করতে পারেন, আপনার বন্ধুকে যেকোন টপিক বুঝিয়ে দিতে পারেন, মনে রাখবেন নিজে একটা জিনিস শিখে এইটা অন্যকে বুঝিয়ে দিলে অনেক আনন্দ পাওয়া যায়,। তখন আপনার নিজের কাছেই এই বিষয়টা ভালো লাগতে শুরু করবে। তাই নিজে জানুন আর অন্যকে সেইটা বুঝিয়ে জানিয়ে আনন্দ লাভ করুন।

৮. যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি

লেখাপড়া আপনার যোগাযোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। আপনি যোগাযোগ বৈকল্য নিয়ে আলোচনা করুন, বিভিন্ন দেশের ভাষা সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করুন,। যার ফলে আপনি যেকোন দেশের সাথে সহজেই যোগাযোগ করতে পারবেন, যেকোন দেশের মানুষের সাথে খুব সহজেই দ্বিধাহীন কথা বলতে পারবেন।

৯. কল্পনাশক্তির বিস্তরণ

মানুষের সবচেয়ে বড় দিক গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে তার কল্পনাশক্তি। পড়াশুনা করলে আপনি কল্পনার জগতে ভাসবেন না বরং কল্পনা থেকে বাস্তবে পরিণত করার রাস্তা খুঁজে পাবেন। কল্পনা হলো আপনার সবচেয়ে বড় শিক্ষক, আপনি আপনার কল্পনাকে যতবেশি শক্তিশালী করবেন আপনি তত বেশি আত্নপ্রত্যয়ী ও দূরদর্শিতা সম্পন্ন হবেন।

১০. সহনশীলতা ও ধৈর্য্য

পড়াশুনা করবেন সহনশীলতার সাথে। কখনো ধৈর্য্য হারাবেন না, আপনি আপনাকে যত বেশি সহনশীল আর ধৈর্য্যশীল করে তুলবেন আপনি ততবেশি উন্নতি করতে পারবেন। আপনি লেখাপড়া করেন খুব অল্প সেইটা সমস্যা নাই, কিন্তু আপনাকে প্রতিদিন লেখাপড়া কর‍তে হবে ধৈর্য্যের এবং সহনশীলতার সাথে।

তাই পরিশেষে বলা যায় যে, মানুষের লেখাপড়া করার কারণ বলে শেষ করা যাবে না,। আর জীবনে লেখাপড়ার শেষ নাই। তাই জীবনে সাফল্য আর জ্ঞান অর্জন করতে হলে বেশি বেশি শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।

তাই তো উইলিয়াম শেকসপিয়র বলেছেন "সাফল্যের ৩ টি শর্ত" :

  1. অন্যের থেকে বেশি জানুন।
  2. অন্যের থেকে বেশি কর্ম করুন।
  3. অন্যের থেকে বেশি কম আশা করুন।

এই পোস্টটি লিখেছেন:

হাবিবা খানম তুষিহাবিবা খানম তুষি
হাবিবা খানম তুষি

হাবিবা খানম তুষি এই ব্লগের একজন নিয়মিত লেখিকা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে বেড়ে উঠা “হাবিবা খানম তুষি” বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিউজিক ডিপার্টমেন্ট এ পড়াশোনা করছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন বিষয়ে শিখতে ও লিথতে পছন্দ করেন।
তার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন তার ফেসবুক আইডিতে

এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)

নবীনতর পূর্বতন