আপনি কি জানেন আপনার গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজার কতটুকু নিরাপদ?

আপনি কি গুগল ক্রোমের বিল্ট-ইন পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করেন? এটি অবশ্যই ব্যবহারে সহজ এবং ফ্রীতে পাওয়া যায়, তবে এই সুবিধার পেছনে নিরাপত্তা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন রয়েছে।

চলুন প্রযুক্তির বিশ্ব ব্লগের আজকের এই পোস্টে জেনে নেওয়া যাক, আপনার অনলাইন জগতের সকল পাসওয়ার্ড সংরক্ষণের জন্য গুগলের এই টুলটি কতটুকু নিরাপদ এবং এর কী কী সীমাবদ্ধতা আছে।


গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজার নিরাপদ কিনা পর্যালোচনা, গুগল ক্রোম পাসওয়ার্ড সেভ করা ঝুঁকিপূর্ণ কিনা

গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজারের সুবিধা

প্রথমেই গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজারের ইতিবাচক দিকগুলো দেখি। এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এবং আপনার গুগল অ্যাকাউন্টের সাথে অটোমেটিকালি সিঙ্ক হয়। তাই আপনি যখনই নতুন কোনো ওয়েবসাইটে একাউন্ট খুলবেন বা লগ ইন করবেন, ক্রোম আপনাকে পাসওয়ার্ড সেভ করার সুপারিশ করবে। এটি দুর্বল পাসওয়ার্ড চিহ্নিত করে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরির সুযোগও দেয়। গুগল ইকোসিস্টেমের মধ্যে থাকলে (ক্রোমব্রাউজার, অ্যান্ড্রয়েড ফোন) এটি সত্যিই অসাধারণ সুবিধাদাতা।

নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগগুলো

তবে, নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজার টুল ব্যবহারে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন। প্রধান চিন্তার বিষয়টি হলো "জিরো-নলেজ এনক্রিপশন" এর অনুপস্থিতি। নর্ডপাস বা বিটওয়ার্ডেনের মতো ডেডিকেটেড পাসওয়ার্ড ম্যানেজারে এই ফিচার থাকে, যার মানে সার্ভিস প্রদানকারী কোম্পানিরও আপনার পাসওয়ার্ড দেখার বা ডিক্রিপ্ট করার কোনো সুযোগ নেই। গুগলের ক্ষেত্রে এনক্রিপশন কী আপনার ডিভাইসেই থাকে, যাতে ম্যালওয়্যারের মাধ্যমে এটি চুরি হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।

ডাটা ব্রিচের ঝুঁকি


আপনার সব পাসওয়ার্ড গুগলের ক্লাউড সার্ভারে জমা থাকে। গুগল একটি বৃহৎ টেক জায়ান্ট হওয়ায় এটি সাইবার আক্রমণের প্রথম এবং বড় লক্ষ্য। যদিও গুগলের নিরাপত্তা টপ লেভেলের শক্তিশালী, তবুও কোনো বড় ধরনের ডাটা ব্রিচ হলে লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারীর সংবেদনশীল তথ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে। সম্প্রতি ২০২৫ সালের অক্টোবরে কিছু ব্যবহারকারীর তথ্য ফাঁসের অভিযোগও এই ভয়কে আরও বাড়িয়েছে।

গুগল ইকোসিস্টেমে আটকে যাওয়া

গুগলের এই পাসওয়ার্ড ম্যানেজারটি মূলত ক্রোম ও অ্যান্ড্রয়েডের জন্যই অপ্টিমাইজড করা। আপনি যদি অ্যাপলের ম্যাক, আইফোন বা আইপ্যাড ব্যবহার করেন, তাহলে এর কার্যকারিতা বেশ সীমিত হবে। ফলে যারা বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেম ও ডিভাইস ব্যবহার করেন, তাদের জন্য এটি খুব একটা কার্যকর সমাধান নাও হতে পারে।

বিকল্প হিসেবে ডেডিকেটেড পাসওয়ার্ড ম্যানেজার


নর্ডপাস, বিটওয়ার্ডেন বা লাস্টপাসের মতো বিশেষায়িত পাসওয়ার্ড ম্যানেজারগুলো বাড়তি নিরাপত্তা সুবিধা দেয়। যেমন: ডার্ক ওয়েব মনিটরিং (আপনার তথ্য ইন্টারনেটের অন্ধকার জগতে লিক হচ্ছে কিনা তা চেক করা), ফিশিং অ্যালার্ট, এবং উন্নত পাসওয়ার্ড হেলথ চেক। এগুলো সাধারণত সাবস্ক্রিপশন ভিত্তিক হলেও বাড়তি নিরাপত্তার জন্য মূল্যবান বিনিয়োগ।


প্রযুক্তির বিশ্ব টিমের পক্ষ থেকে সবশেষে পরামর্শ

আপনি যদি একজন সাধারণ গুগল ব্যবহারকারী হন এবং শুধুমাত্র গুগল ইকোসিস্টেমেই কাজ করেন, তাহলে গুগল পাসওয়ার্ড ম্যানেজার প্রাথমিক চাহিদা মেটাতে পারে। কিন্তু আপনার যদি অনলাইন ব্যাংকিং, ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ বা অন্য কোনো অনলাইন সনসেটিভ অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে ডেডিকেটেড পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। আপনার সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জন্য টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখা এবং জিরো-নলেজ আর্কিটেকচার যুক্ত সার্ভিস বেছে নেওয়াই ভাল হবে।

আমরা প্রযুক্তির বিশ্ব টেক ব্লগের টিম সবসময় চাই আপনার ব্যাক্তিগত তথ্য ডিজিটাল জগতে সুরক্ষিত থাকুক। প্রযুক্তির সকল খবরাখবর পেতে নিয়মিত ভিজিট করুন আপনার এই প্রিয় ব্লগ। ধন্যবাদ। ভাল থাকুন সবসময়।

এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই পোস্টটির সম্পর্কে আপনার মতামত, প্রশ্ন অথবা কিছু জানতে বা জানাতে চাইলে অনুগ্রহ করে নিচে আপনার মন্তব্যটি লিখুন।
ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুন (0)

নবীনতর পূর্বতন